Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ধানের টুংরো রোগ দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি

ধানের টুংরো রোগ দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি
মোঃ মামুনুর রশিদ
ধানের মূখ্য রোগসমূহের মধ্যে যেসব রোগ বেশি মাত্রায় ক্ষতি করে তার মধ্যে টুংরো রোগ অন্যতম। কুমিল্লা অঞ্চলে ধানের টুংরো রোগ প্রধানত আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমে দেখা যায়। বাংলাদেশের মধ্যে কুমিল্লা অঞ্চল টুংরোপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। সবুজ পাতাফড়িং নামক এক ধরনের পোকা এ রোগটির বাহক। কুশি অবস্থা থেকে থোড় আসা পর্যায় পর্যন্ত যে কোন সময় এ রোগটি দেখা দিতে পারে। এ রোগের আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বীজতলায় ধানের চারা গাছ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে, লাগানোর পর লক্ষণ প্রকাশ পেলে এবং রোগের মাত্রা বেশি হলে ক্ষেত্র বিশেষে ধানের ফলন ১০০% পর্যন্ত নষ্ট হতে পারে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, কুমিল্লা হতে ধানের টুংরো রোগ দমন ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করা হয়। কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট, দেবিদ্বার ও লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন ব্লকে কৃষকের ধানের বীজতলায় ও জমিতে আউশ, আমন ও বোরো ২০১৯-২০, ২০২০-২১ মৌসুমে টুংরো রোগ দমনের পরীক্ষা স্থাপন করে তা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। উক্ত পরীক্ষা হতে দেখা যায় যে, টুংরো রোগের মূল কারণগুলো হলো বীজতলায় প্রচুর পরিমাণে সবুজ পাতা ফড়িং-এর উপস্থিতি, বীজতলা হতে টুংরো রোগের উপস্থিতি, বার্ষিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি, কম বৃষ্টিপাত, টুংরো সংবেদনশীল ধানের জাত চাষাবাদ, বছরের তিন মৌসুমেই ধান চাষ ইত্যাদি।
রোগের কারণ ও লক্ষণ : এ রোগ জরপব ঞঁহমৎড় ঠরৎঁং (জঞঠ) নামক জীবাণু দ্বারা হয় যা সবুজ পাতাফড়িং নামক এক ধরনের পোকার মাধ্যমে ছড়ায়। তাই সবুজ পাতাফড়িংকে এ রোগের বাহক বলা হয়।
ধান গাছ প্রাথমিক পর্যায়ে বিক্ষিপ্তভাবে হলদে অথবা কমলা হলুদ রঙের হবে এবং সুস্থ্য গাছের তুলনায় গাছ খাট হয়ে যাবে। ধান গাছের নতুন শিকড় গজায় না ও শিকড় দুর্বল হয়ে পড়ে যার ফলে গাছ টান দিলে সহজে মাটি থেকে উঠে আসে। টুংরো আক্রান্ত গাছের পাতায় লম্বালম্বিভাবে হালকা সবুজ ও হালকা হলদে রেখা দেখা দেয়। পরে ধীরে ধীরে পুরো পাতাটাই হলদে থেকে কমলা হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত কচি পাতা হালকা হলুদ রঙের হয় এবং মুচড়ে যায়। আক্রান্ত গাছ বেঁচে থাকলেও তাতে কিছুটা বিলম্বে ফুল আসে এবং এসব গাছে ধানের ছড়া আংশিক বের হয়, দানাগুলো কালো ও অপুষ্ট হয়। উক্ত গবেষণায় বীজতলায় ধানের চারা গাছ ভাইরাস দারা আক্রান্ত হলে মূল জমিতে লাগানোর পর প্রায় পুরো জমিতে লক্ষণ প্রকাশ পায় যদি প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে বিক্ষিপ্তভাবে দু-একটি গাছে লক্ষণ দেখা যায় তবে ধরে নিতে হবে সবুজ পাতাফড়িং পোকা ধান লাগানোর পর আক্রমণ করেছে। কোনো ব্যবস্থাপনা না নিলে আক্রান্ত গাছের সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এখানে উল্লেখ্য যে, ইউরিয়া সার অর্থাৎ নাইট্রোজেন-এর অভাবে পুরো জমির ধান গাছের বয়স্ক পাতা এবং সালফারের অভাবে কচি পাতা সমভাবে হলুদ হয়ে যাবে কিন্তু টুংরোর ক্ষেত্রে বয়স্ক এবং কচি উভয় পাতাই হলুদ হয়ে যাবে।  
রোগের অনুকূল অবস্থা
সাধারণত আউশ, আমন ও বোরো তিন মৌসুমেই ধান চাষ করলে এবং রোগপ্রবণ জাত লাগালে টুংরো রোগের প্রকোপ খুব বেশি দেখা যায়। আশেপাশে রোগাক্রান্ত গাছ, বাওয়া ধান, মুড়ি ধান (রেটুন) বা ঘাসজাতীয় আগাছায় টুংরো রোগের ভাইরাস বেঁচে থাকে। সবুজ পাতাফড়িং রোগাক্রান্ত গাছ খেয়ে ভাইরাস সংগ্রহ করে সুস্থ গাছে ছড়ায়। সাধারণত আক্রমণের ১৪-২১ দিন পরে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত ধানক্ষেতে সবুজ পাতাফড়িং সংখ্যায় বেশি থাকলে রোগটি এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া যেসব এলাকায় তিন মৌসুমে ধান চাষ করা হয় সেসব এলাকায় টুংরো রোগের প্রকোপ বেশি হতে পারে।
টুংরো রোগ দমনে ব্রি উদ্ভাবিত প্রযুক্তি (কুমিল্লায় মাঠপর্যায়ের গবেষণা হতে প্রাপ্ত)
তিন মৌসুমের গবেষণা হতে একটি প্রযুক্তি সুপারিশ করা হয় যা নিম্নরূপ
১) টুংরো প্রবণ এলাকায় বীজতলা হতে বাহক পোকা সবুজ পাতাফড়িং দমন (হাত জাল/আলোক ফাঁদ/কীটনাশক) করতে পারলে ধানের জমিকে টুংরো রোগ হতে রক্ষা করা যায়।  
২) বীজতলা হতে সবুজ পাতাফড়িং দমনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল বীজতলায় শোষক পোকার জন্য সারণি-১ এ উল্লেখিত অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ২ বার স্প্রে করা।
৩) মৌসুমভেদে কীটনাশক স্প্রে করার সময় : আউশ মৌসুমে বীজ বপনের ১০ দিন পর একবার ও ধান লাগানোর ৩-৫ দিন পূর্বে আরেকবার; আমন মৌসুমে বীজ বপনের ১০-১৫ দিন পর একবার ও ধান লাগানোর ৫ দিন পূর্বে আরেকবার; বোরো মৌসুমে বীজ বপনের ১৫-২০ দিন পর একবার ও ধান লাগানোর ৫ দিন পূর্বে আরেকবার।  অথবা, ৫ দিন অন্তর অন্তর বীজতলায় আলোক ফাঁদ এবং হাত জাল দিয়ে সবুজ পাতাফড়িং দমন করতে হবে।
মনে রাখতে হবে যে, যেকোনো কীটনাশক এক শতক জমিতে স্প্রে করতে ২ লিটার পানি লাগবে।
১) প্রাথমিক অবস্থায় টুংরো আক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তা উঠিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলা।
২) ধান গাছের সর্বোচ্চ কুশি পর্যায়ে পুরো জমিতে টুংরো আক্রান্ত হলে থিওভিট ১০০ গ্রাম, এমওপি (পটাস) ১০০ গ্রাম ১৬ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৮ শতক জমিতে ৭-১০ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
৩) ধান লাগানোর পর টুংরো রোগের প্রাথমিক পর সারণি-১ এ উল্লেখিত যেকোনো কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে যার ফলে রোগের বাহক পোকা মারা যাবে ও রোগের বিস্তার রোধ হবে।
দমন ব্যবস্থাপনার লাভক্ষতির বিশ্লেষণ
বীজতলায় কীটনাশক যেমন এমআইপিসি অথবা কার্টাপ ২ বার স্প্রে করলে প্রতি শতক বীজতলায় খরচ হবে ২২ টাকা অর্থাৎ ২ শতকে খরচ হবে ৪৪ টাকা। দুই শতক বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ১ বিঘা জমির ধান লাগানো যায়। টুংরো রোগের ফলে ১০০% পর্যন্ত ফলন নষ্ট হয়। যার ফলে কৃষকের বিঘা প্রতি (যদি বিঘায় গড়ে ১৭ মণ হারে ও সর্বনিম্ন ১০৮০ টাকা মণ হলে) প্রায় ১৮৩৬০ টাকা ক্ষতি হয় যা বীজতলায় মাত্র ২২-৪৪ টাকা (কীটনাশকভেদে) খরচ করে রক্ষা করা যায়।
বি. দ্র : কীটনাশক ব্যবহারের সময় হাতে রাবার অথবা প্লাস্টিকের গ্লাভস এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন, যাতে রাসায়নিক দ্রব্যাদি শরীরের সংস্পর্শে না আশে এবং শ্বাস-প্রশ^াসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে না পারে। ক্ষত হাতে ঔষধ মেশানো যাবে না প্রয়োজনে কাঠি দিয়ে ঔষধ মিশিয়ে নিন।

লেখক : ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, কুমিল্লা। মোবাইল : ০১৭১২-৮৮৭৫০৭, ই-মেইল : mamunbrri@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon